শ্রীনগরে নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে নৌকা কারিগরেরা

সমকলীন মুন্সীগঞ্জ ডেক্স, ৪ আগস্ট ২০২১:

বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় পানি দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে নৌকার চাহিদা বাড়ছে। এতে স্থানীয় হাটে বাজারে নৌকা বিকিকিনির পাশাপাশি কাঠ মিস্ত্রিরাও নৌকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।

এছাড়াও স্থানীয় অনেকেই পুঁজি খাটিয়ে নৌকা তৈরীর উপকরণ সামগ্রী কিনে অভিজ্ঞ নৌকা তৈরির কারিগর দ্বারা বিভিন্ন আকার ও সাইজের কোষা নৌকা তৈরী করে পাইকারীভাবে বিক্রি করছেন। এমন দৃশ্য লক্ষ করা গেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে।

উপজেলার তিন দোকান, পাটাভোগ, কুকুটিয়া, রানা, সাতগাঁও, ষোলঘরসহ বিভিন্ন রাস্তার পাশে কাঠ মিস্ত্রিরা কোষা নৌকা বানাচ্ছেন। এসব নৌকা তৈরী কাজে প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছেন চামবল, মেহগনি, কড়ইসহ অন্যান্য জাতের কাঠ।

৪/৫ জন কারিগর মিলে দৈনিক ৩ থেকে ৪টি ডিঙ্গি কোষা তৈরী করা হচ্ছে। ৮ হাত দীর্ঘ একটি নৌকার পাইকারী দাম ধরা হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আকার ও সাইজ অনুসারে এসব নৌকার দাম কম বেশী হতে পারে। দেখা গেছে, পুর্ব পাটাভোগের নজরুল নামে এক ব্যক্তি বেশ কয়েকজন কাঠ মিস্ত্রি নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা নৌকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।

কাঠ মিস্ত্রি জাহিদুল জানান, নৌকার চাহিদা থাকায় বর্ষায় তারা রোজ চুক্তিতে নৌকা তৈরীর কাজ করেন। এ কাজে তারা ৪/৫ জন মিলে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি কোষা নৌকা বানাতে পারেন। তাদের তৈরীকৃত নৌকা পাইকারী দরে শ্রীনগর দেউলভোগ নৌকার হাটসহ অন্যান্য হাটেও বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার শ্রীনগরের দেউলভোগ নৌকার হাটে প্রায় শতাধিক রেডিমেট নৌকা বিকিকিনি হচ্ছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোয়ালীমান্দ্রা হাটেও নানা ধরনের নৌকা বিক্রি বিকিকিনি হয়ে থাকে। বর্ষা এলেই এসব নৌকা তৈরী কাজে কাঠ মিস্ত্রিদের অনেকাংশেই কদর বাড়ে। একজন কারিগরের সর্বনিম্ন দৈনিক মজুরি ধরা হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা করে।

ষোলঘর এলাকার নৌকা ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, কাঠের মান ও সাইজ অনুসারে রেডিমেট এসব কোষা নৌকার দাম নির্ধারণ করা হয়। কাঠের মান ও আকার অনুসারে রেডিমেট এসব নৌকা সর্বোনিম্ন ২ হাজার ৫শ’ থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। এছাড়াও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নৌকা তৈরী অর্ডার নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে দেউলভোগ নৌকা হাটের ইজারাদার মো.সাগর জানান, জেলায় ঐতিহ্যবাহী দেউলভোগ নৌকার হাটটির ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। এই অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠির বড় একটি অংশ বর্ষার কয়েক মাস যাতায়াতের জন্য নৌকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এদের অনেকেই এই হাটে নৌকা কিনতে আসেন। প্রত্যেক মঙ্গলবার সাপ্তাহিক নৌকার হাট বসলেও বর্তমানে প্রতিদিনই এখানে নৌকা বিকিকিনি হচ্ছে।