মুন্সীগঞ্জে কঠোর অবস্থানে আওয়ামীলীগ : হামলা ও গায়েবি মামলার আতংকে বিএনপি

শেখ মোহাম্মদ রতন, সমকালীন মুন্সীগঞ্জ:-২৮-১২-১৮

মুন্সীগঞ্জর তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারনা থাকলেও গায়েবী হামলা-মামলার কারনে বিএনপির প্রচার প্রচারনা নেই বললেই চলে। এদিকে সেনাবাহিনী মাঠে নামলে বিএনপির প্রচার প্রচারনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করলেও কার্যত আশা ভঙ্গ হয়েছে তাদের।

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত সশন্ত্র বাহিনী মাঠে নামার পরও জেলার তিনটি আসনেই বিএনপি প্রার্থীর গনসংযোগ করতে পরেনি। হামলা ও গাড়ী ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে ।

মুন্সীগঞ্জে ৬টি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলায় ২টি পৌরসভাসহ ৬৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। জেলার মোট জনসংখ্যা ১২,৯৩,৯৭২ জন। মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম ১১,৮১,০১২ জন, হিন্দু ১,১০,৮০৪ জন , বৌদ্ধ ১৯২২ জন , খ্রিস্টান ১০৩ জন এবং অন্যান্য ৩০৮ জন। তিনটি আসনে মোট ভোটার ১১,৬৩,৫৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫,৯৭,৭৫৬ জন ও মহিলা ৫,৬৫,৭৯২জন। ৯৫৪.৯৬ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এ জেলা বিএনপির দূর্গ হিসাবে পরিচিত।

মুন্সীগঞ্জ আসন-১
এই আসনের মহাজোটের প্রার্থী মাহি বি চৌধুরী । সব জায়গায় তার নৌকা প্রতিকের পোষ্টার ব্যানার থাকলেও বিএনপির প্রার্থী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের কোন পোষ্টার নেই কোথাও । বিএনপির প্রার্থী শাহ মোয়াজ্জেমের অভিযোগ নৌকার সমর্থকরা তার কোন পোষ্টার ঝুলাতে দিচ্ছেনা। প্রতিনিয়ত তার প্রচার প্রচারনায় নৌকা সমর্থকদের হামলা, পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা, নেতাকর্মীদের মারধর, পুলিশী গ্রেফতার ও পুলিশের পক্ষপাতিত্বসহ নানান অভিযোগ করেন তিনি। হামলা, মামলার ও নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও তিনি মাঠে রয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ আসন-২
নৌকার প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি নিয়মিত শো-ডাউন, প্রচারন প্রচারনা করলেও এই আসনেও বিএনপির প্রার্থী হামলা মামলার আতংকে আজও মাঠে নামতে পারেনি। কোথাও বিএনপির কোন নির্বাচনী ক্যাম্প ও রাস্তাঘাটে কোন পোষ্টার ঝুঁলানো নেই। মাঠে সেনাবাহিনী আছে এই ভরসায় বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহা নির্বাচনী এলাকায় তার গ্রামের বাড়ী কলমা আসেন। আসার পর পর তার গাড়ী বহরে হামলা চালিয়ে গাড়ী ভাংচুর ও তাকেসহ তার ৯ জন নেতাকর্মীতে গুরুত্বর আহত করা হয়। ২ বার তার উপর সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার কারনে তিনি এখন নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। নেতাকর্মীদের মনেও ভয় ও শংকা কাজ করছে।

মুন্সীগঞ্জ আসন-৩
নৌকার প্রার্থী এডভোকেট মৃনালকান্তি দাস। শুরু থেকেই ব্যাপক প্রচার প্রচারনা করে যাচ্ছে তিনি। প্রতিদিনই তিনি বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক, নির্বাচনীসভা ও রাস্তায় শো- ডাউন করেন। অন্যদিকে হামলা মামলা, পুলিশী গ্রেফতারের কারনে শুরু থেকে বিএনপির প্রার্থী আবদুল হাই তেমন কোন প্রচার প্রচারনা চালাতে পারেনি। প্রতিক বরাদ্দের পর থেকেই একাধিকবার হামলা, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাংচুর, গণ গ্রেফতার, গায়েবি মামলাসহ নানা প্রতিকূলতার কারনে এখনও প্রচারনায় পিছিয়ে বিএনপি। এই আসনটিতেও নেই বিএনপির কোন পোষ্টার ব্যানার। হামলা মামলা শিকার হয়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা আবদুল হাই এর পক্ষে প্রচার প্রচারনা সীমিত আকারে চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের মাঝে এখনও শংকা আরো ঘনিভুত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা নির্বাচন কমিশনার মো. আনিসুর রহমান জানান, নির্বাচনে জেলার প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন, সেনাবাহিনিসহ বিজিবির সদস্যরা সার্বক্ষনিক টহলরত অবস্থায় থাকবে। কোন প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেয়া হবে না।   এ ব্যপারে প্রশাসনকে যে কোন পদক্ষেপ নেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।