মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সরকারি খালের উপর অবৈধ বাধ দিয়ে ইউপি মেম্বারের ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ !

সমকালীন মুন্সীগঞ্জ ডেক্স :

সারাদেশে নদী-নালা,খাল-বিল সংরক্ষণ, খনন ও রক্ষার পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে সরকার। আর মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রবাহমান সরকারি খালের উপর অবৈধ বাধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পুরানো গোবরদী খালের উপর রাস্তার নামে অবৈধ বাধ দিয়ে ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করছে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য (৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড) সাবিনা আক্তার।

জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প অফিসের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকার ৪০ দিনের কর্মসুচির নামে খালের পাশে রাস্তা সংস্কার করা বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়। একই রাস্তা সংস্কারের জন্য গত ২০১৬-১৭ ইং অর্থ বছরে ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কোন কাজ করেনি সাবিনা আক্তার।

২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দের মধ্যে রাস্তা সংস্কার নামে মাত্র ১লাখ ১০ হাজার খরচ করা হয়। সরকারের নদী খাল সুরক্ষা আইন মেনে প্রকল্পটির খালের উপর বাধ নির্মাণ অংশ বাতিল করা হয়।

প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করে খালের উপর অবৈধ বাধ দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করেন মহিলা ইউপি সদস্য সাবিনা আক্তার। রেকর্ডে গোবরদী মৌজার এসএ ২৬৭ নং দাগের খালটি উপজেলার ইছামতি নদির সাথে সংযোগস্থল। এভাবে খালে অবৈধ বাধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা বেআইনি।

স্থানীয় ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গোবরদী গ্রামের খালের প্রবাহমান অংশ ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। খালে বাধ দেয়ায় বর্ষা মৌসুমে নৌ পথে চলাচল বন্ধসহ অত্র এলাকার বিলে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকবে। কৃষি নির্ভর এ এলাকার ফসলের মাঠের উর্বতা হারিয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে।

ধারণা করা হচ্ছে খাল ভরাটের মধ্যে দিয়ে খালের অস্তিত্ব বিলীন করে খাল দখলের পায়তারা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। আশির দশকেও এ খাল দিয়ে লঞ্চ চলাচল করলেও কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যায় বর্তমানে কৃষকের কথা চিন্তা করে খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে খালে অবৈধ বাধ উচ্ছেদ করা হোক কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়দের দাবি।

মহিলা ইউপি সদস্য সাবিনা জানান, এটা সরকারি খাল কি না জানিনা। যদি মাইপা সরকারি খালে পরে তাইলে কি এ বাড়ীর মানুষ গুলা বের হতে পারতো না। এ খালটা তো কোন কাজে লাগেনা। পূর্বে-পশ্চিমে পুকুর, খাল এটা বাধার কারণে কোন ক্ষতি হয় না। যদি ক্ষতি হইতো তাইলে চেয়ারম্যান বলতো। চেয়ারম্যান দেখছে কোন ক্ষতি হয় না।

বয়রাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মো. আলাউদ্দিন জানান, এ খালটা কতটুকু প্রয়োজন তাও প্রশ্ন আমার। এ খাল টা সরকারি কি না তা জানা নাই।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রোববার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম জানায়, সরকারি খাল দখলের খবর সকালেই পেয়েছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নায়েবকে পাঠিয়ে খাল দখল মুক্ত করার লক্ষে মাটি ভরাট কাজ বন্ধ করে দিয়া হয়েছে।

পরবর্তিতে যদি আবার ইউপি সদস্য খাল ভরাট করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।