শেখ মোহাম্মদ রতন, সমকালীন মুন্সীগঞ্জ:-২২ মার্চ ২০২০:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে এবার আবিষ্কৃত হলো পিরামিড আকৃতির নান্দনিক স্তূপ। নাটেশ্বর বৌদ্ধ নগরী আবিষ্কারের পর ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে আবিষ্কৃত হলো এটি।
এতে স্থাপত্যটির অনেক নান্দনিক রূপ ফুটে উঠেছে। তার মধ্যে মেদির দেয়াল ৬৪ সেন্টিমিটার উঁচু ও প্রশস্ত প্রায় তিন মিটার। অন্য অংশে তিন মিটার পর্যন্ত টিকে আছে কোনো কোনো জায়গায়। দেয়ালের বহিঃপার্শ্বে চারটি প্যানেলে বিভক্ত মনোরম নকশা তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রের অংশটি মাটি দিয়ে ভরাট করা। ফলে নিরেট আকার ধারণ করেছে স্তূপটি।
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. নূহ-উল-আলম লেনিন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের চলমান সময়ের মধ্যে নাটেশ্বর গ্রামের খননের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে বৌদ্ধ মন্দির, অষ্টকোনাকৃতি স্তূপ, ইটে নির্মিত নালা, রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। খননকাজ অব্যাহত রাখায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আবিষ্কৃত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ দুষ্প্রাপ্য পিরামিড আকৃতির নান্দনিক স্তূপের ৪৪ মিটার দীর্ঘ দক্ষিণ বাহু। এটির সময়কাল নির্ণয় করা হয়েছে ৭৮০-৯৫০ খ্রিস্টাব্দ।
খননকাজের তত্ত্বাবধানে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহ সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মে স্তূপ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য। স্তূপ মূখ্যত সমাধি। তবে এটি বৌদ্ধ ধর্ম, দর্শন ও সংস্কৃতিকেও প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্থাপত্যের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ ও তার প্রবর্তিত বৌদ্ধ ধর্মকে প্রতীকায়ন হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়। স্তূপটি ব্যতিক্রম, পিরামিড আকৃতির। এই আকৃতি নিজে একটি তাৎপর্য বহন করে এবং বাংলাদেশে এই প্রথম।’
তিনি বলেন, ‘পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের জন্মভূমি বিক্রমপুরে প্রায় ১২০০ বছর আগের স্তূপ আবিস্কার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বিশালত্বের দিক থেকে এটি সাঁচী, ভারহুত, অমরাবতী, সারনাথসহ পৃথিবী বিখ্যাত মহাস্তূপগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। যার সময়কাল বিবেচনায় এটি পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের (৯৮২-১০৫৪ খ্রিস্টাব্দ) পূর্বের কীর্তি।’