টঙ্গিবাড়ীতে আ’লীগ নেতার অবৈধ দোকান সংস্কারে বিএনপি নেতাকর্মীর বাঁধা: সংঘর্ষের আশঙ্কা

সমকালীন মুন্সীগঞ্জ ডেক্সঃ

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীর রহিমগঞ্জ বাজারে রাতের আধাঁরে সরকারি জায়গায় আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের উত্তোলন করা দোকান সংস্কারে বাঁধা দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে বাঁধা দেওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাকবিতন্ডায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

তবে এ ঘটনার পর থেকে উপজেলার রহিমগঞ্জ বাজার (বিয়ানিয়া বাজার) ও ধামারণ গ্রামে বিএনপি ও আ’লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর রাতে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কাঠাদিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়ন আলীগের সাধারন সম্পাদক আনিসুর রহমান ও প্রয়াত আ’লীগ নেতা জমির আলী রাতের আধাঁরে রহিমগঞ্জ বাজারের সরকারি জায়গায় দোকানঘর উত্তোলন করেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র নির্দেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে অবৈধ ভাবে দোকানঘর উত্তোলনের সত্যতা খুজেঁ পান। পরবর্তীতে অবৈধ ভাবে দোকানঘর উত্তোলনে জড়িতদের কাছে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানো হয়।

কিন্তু নোটিশ পাঠানোর ১২ বছর অতিবাহিত হলেও দখলকারীরা উচ্ছেদ নোটিশের কোন কর্নপাত করেনি। উল্টো গতকাল শুক্রবার দোকানঘর সংস্কার করার উদ্যোগ নেয় ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান গং। খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সংস্কার কাজে বাঁধা দিলে দুই পক্ষ বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানান, এই সরকারের আমলে অবৈধ দখল করা দোকানের রকম পরিবর্তন করতে দিয়ে বিএনপির দুর্নাম করতে দেওয়া হবে না। তাই অবৈধভাবে উত্তোলন করা দোকানঘর সংস্কার কাজে বাঁধা দেওয়া হয়। এতে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ জলিল মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুন শেখ ও জসিম মোল্লার সাথে বাকবিতান্ডায় লিপ্ত হয়। এতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

জানতে চাইলে কাঠাদিয়া শিমুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বাজারে দোকানঘর উত্তোলন করার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সংস্কার কাজ করতে গেলে বাঁধা প্রদান করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ জলিল মোল্লা বলেন, রাতের আধাঁরে দোকানঘর উত্তোলন করার হোতা আওয়ামী লীগ ও ইউপি চেয়ারম্যান আনিস বর্তমান সরকার ও বিএনপির ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানায়, তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল রহিমগঞ্জ বাজারে অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ করতে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ করার নিদের্শ দিয়েছিলেন। এরপরও কি কারনে সে সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি তা খতিয়ে দেখা হবে।

টঙ্গিবাড়ি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসলাম হোসাইন রাতে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া বিগত সময়ে এই দোকানঘর নিয়ে উচ্ছেদ মামলা হয়ে থাকলে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।