শেখ মোহাম্মদ রতন, সমকালীন মুন্সীগঞ্জ:-২৭-১২-১৮
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভিশন মুক্তিযুদ্ধ-৭১ বাস্তবায়নের লক্ষে মুন্সীগঞ্জ-৩ (সদর ও গজারিয়া) আসনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পাটির মনোনিত প্রার্থী ও সিপিপি-মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ.ম.কামাল হোসেন” কাস্তে” মার্কা প্রতীকের প্রার্থী দিনরাত নির্বাচনী জনসভা, উঠান বৈঠক ও হাটবাজারগুলোতে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বৈষম্যহীন ইনসাফের সমাজ গড়তে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল বাঁধা উপেক্ষা করে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সিপিবি-কমিউনিস্ট পাটির মনোনীত প্রার্থী- শ.ম.কামাল হোসেন, সিপিবি-কমিউনিস্ট পাটির মনোনীত প্রার্থীর জোর প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ পর্যন্ত তারা মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে (সদর ও গজারিয়া) আসনে ৩৫ টি পথসভা, গনসংযোগ ও পথসভাসহ শতাধীক উঠান বৈঠক করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী সিপিবি-কমিউনিস্ট পাটির মনোনীত প্রার্থী, শ.ম. কামাল হোসেন সাধারণ ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন,- ‘বর্তমানে বালাদেশের আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দুটি দলের চরিত্রই এক। তাদের চরিত্র হচ্ছে টাকার এপিট ওপিট। তাদের মতো শোসক দলের শোষন থেকে বাঁচতে বর্তমান তরুনসহ সাধারণ ভোটাররা জামায়াত-শিবিরসহ বিএনপি ও আওয়ামীলীগের মতো দলকে প্রত্যাক্ষান করে মুক্তিযোদ্ধের স্ব-পক্ষের দল সিপিবি-কমিউনিস্ট পাটির “কাস্তে” মার্কায় ভোট দেবার আহবান জানিয়েছেন।
জনগন এখন বুঝে গেছে আদর্শহীন লুটপাটের দল হচ্ছে জামায়াত-শিবিরসহ বিএনপি ও আওয়ামীলীগ। তাদের কাছে রাস্ট্র এখন সম্পুর্ন জিম্মি হয়ে গেছে। মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতা হরন করা হয়েছে।
বিএনপি ও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দেবার কথা বলছে-তাদের এসব কথা সঠিক নয়। কারণ বাংলাদেশে এখন সাড়ে তিন কোটি সম্পুর্ন বেকার যুবক । তারা ঘরে ঘরে গিয়ে যুবকদের চাকরি দেবার কথা বলছে। যা বিগত ক্ষমতাশীন দল কথনোই পারে নাই এবং আগামীতেও পারবে না। এই সাড়ে তিন কোটি যুবক বেকার যুবকদের চাকরি দেবার জন্য ও সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা ৩৫ বছর করার একমাত্র আমাদের ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা আন্দোলন করে যাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার তাদের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনা করার কারণে তারা আ‘লীগ সরকারকে নির্বাচনে সম্পুর্ন প্রত্যাক্ষান করে কমিউনিস্ট পাটির মতো দলকে নির্বাচিত করবে বলে সাধারণ মানুষ মনে করে।
অন্যদিকে, বিএনপির সাথে জামায়াত ইসলামের মতো যুদ্ধাপরাধীদের যে জোট-তাদেরকেও স্বাধীন দেশের মুক্তিকামি মানুষ ও যুবকরা পছন্দ করছে না। ফলে এই বিএনপি-জামায়াতকেও এদেশের মানুষ-ভোটররা প্রত্যাক্ষান করবে। তাই তাদের কাছে তৃতীয় বিকল্প দল হিসেবে “কাস্তে” মার্কা প্রতীকে ভোট চাই।
তিনি আরো বলেন, যারা আদর্শিকভাবে মুক্তিযদ্ধে গিয়েছিলেন, তাঁদের বড় অংশই ছিল কমিউনিস্ট।
এদের মধ্যে শহিদ ওমর ফারুক, শহিদুল্লা কায়সার, আলতাফ মাহমুদ প্রমুখ শহীদ বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধাগন।
তাঁদের স্বপ্ন ছিল, শোষণ মুক্ত শ্রেনিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নৌকা-ধানের শীষ নয়, “কাস্তে” মার্কায় ভোট দিয়ে শোষণ মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করুন।
বাঁচতে হলে দরকার, কমিউনিস্ট পার্টির সরকার। বাঁচতে হলে দরকার “কাস্তে” মার্কার সরকার।
সিপিপি-মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ.ম.কামাল হোসেন, ২০০৮ সালেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে “কাস্তে” মার্কা নিয়ে অংশগ্রহন করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৮০ সালে ৬ ডিসেম্বর বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর প্রতিস্ঠাতা সদস্যের মাধ্যমে । এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালে কমিউনিস্ট পাটিতে যোগ দেন । এ পাটিতে তিনি টানা ৩৮ বছর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্ট্রিয় সম্পদ যেমন-তেল, গ্যাস রক্ষাসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করেছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মাকর্সবাদী-লেলিনবাদী দল। এ পার্টি অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরাধিকার বহন করে। ভারত বিভাজনের পর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ এ দল পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে জন্মলগ্ন থেকেই এ পার্টি আপোষহীনভাবে অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও মেহনতি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এ পার্টির বীরত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টির বিশেষ গেরিলা বাহিনীর প্রায় ১৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। এ পার্টির কিংবদন্তি নেতা কমরেড মনি সিং মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন।