পুলিশকে মারধর,ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকের উপর হামলা

সমকালীন মুন্সীগঞ্জ ডেক্সঃ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের বাহিরে এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করছিলো আনারস প্রতীকের সমর্থক ও ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু এবং তার লোকজন। সে ঘটনার ছবি তুলছিলেন মানবজমিনের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন। এতে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকের মোবাইফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে আহত করে সাংবাদিককে। সেই সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভেতরে থাকা অন্তত ৭ জন সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

বুধবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ভবানিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনাটি ঘটে। মারধরের শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি।

মনিরুল হক মিঠু হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চেয়ারম্যানের ভাতিজা তানভীর হক তুরীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটকেন্দ্রের বাইরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল হকের সমর্থক মনিরুলহক মিঠু তার লোকজন নিয়ে জড়ো হচ্ছিল। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার সঙ্কায় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ সদস্য মো. সোহেল সবাইকে সরে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলাচালায় মিঠু ও তার লোকজন। ঘটনাটির পাশ থেকে ছবি এবং ভিডিও করছিলেন এক সাংবাদিক। পরে ওই পুলিশকে রেখে সাংবাদিককে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করতে থাকে মিঠু ও তার লোকজন। পরবর্তীতে অন্যান্য সাংবাদিকরা এসে সাংবাদিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর সাংবাদিকরা ভোট কেন্দ্রের ভেতরে আশ্রয় নিলে পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের মারাধরের জন্য তেরে আসত থাকে মিঠু এবং তার লোকজনরা।

এ বিষয়ে মানবজমিনের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন বলেন,ভোটকেন্দ্রের পাশে পুলিশকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে মারধর করছিলো চেয়ারম্যান মিঠুরা। সে ঘটনার ছবি ও ভিডি করায় আমাকেও মারধর করা হয়েছে।আমার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সব ছবি,ভিডিও মুছে দিয়েছে।ফোনটি তারা ভেঙে ফেলেছে।

পুলিশ সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, কেন্দ্রের পাশে একটি দোকান ছিল। সেখানে আনারস প্রতীকের সর্মথকরা জড়ো হচ্ছিল। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আমি তাদেরকে সরে যেতে বলি। সে সময় আনারসের সমর্থকরা আমার উপর হামলা চালায়। সাংবাদিক ছবি তুলায় তাকেও মারধর করে।

মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রের ভেতরে মনিরুল হক মিঠু ও তার লোকজনরা প্রবেশ করে। সাংবাদিকদের হাত কেটে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন।দু’চারজন সাংবাদিক মেরে ফেললে কি হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন।সে ঘটনা ভিডিও করতে গেল মাইটিভি ও রাইজিংবিডি’র সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশ মোবাইল উদ্ধার করে দেয়। পরে, প্রথম আলোর সাংবাদিক মোহাম্মদ ফয়সাল হোসেনের মুঠোফোনও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনায় আরেক ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ মোহাম্মাদ রতন বলেন,সাংবাদিক গোলজারকে মারধরের পর ৩০ মিনিটের মত কেন্দ্রের ভেতর আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।আমরা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম।তারা চুপ করে দারিয়ে ছিল।বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের উর্ধতনদের জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি।এতে আমারা হতবম্ব হয়েছি।

কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক
রতন বৈরাগীকে এ বিষয়ে জিঙ্গেস করা হলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর কেনো ব্যবস্থা নিলেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন এখানে কিছুই হয়নি।সব ঠিক আছে।এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে পারবো না।

জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।